প্রকল্প পরিচালকের পরিচিতি

ড. মোঃ শাহ কামাল খান বিগত ১২ আগষ্ট ২০২০ খ্রি: তারিখে বিশ্ব ব্যাংক-এর অর্থায়নকৃত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক সারাদেশ ব্যাপি বাস্তবায়নাধীন কৃষি মন্ত্রণালয়ের “কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্প”-এর প্রকল্প পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার খাদুলী গ্রামে ১৯৬৯ সালের ২ নভেম্বর এক মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। পিতা মোঃ নায়েব আলী খান ছিলেন একজন ইঞ্জিনিয়ার এবং মাতা মোছাঃ শাহিদা খাতুন ছিলেন একজন গৃহিনী। ছোটবেলা থেকেই তিনি অসাধারণ মেধা ও সৃজনশীরতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। শিক্ষা জীবনের প্রতিটি ধাপে তিনি প্রথম বিভাগ/শ্রেনী প্রাপ্ত হন এবং এম.এস ইন এগ্রোনমি-তে প্রথম শ্রেনীতে প্রথম (First Class First) হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। তিনি পিএইচডিতে “ধানের জেনেটিক ম্যাপিং”-এর উপর গবেষণা করে সফলকাম এবং প্রসংশনীয় হন। তাঁর পিএইচডি থিসিস ও প্রকাশনা ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সমাদৃত হয়। তাঁর আন্তর্জাতিক সুনামধন্য জার্নালে ৬ টিসহ মোট ১৫টি গবেষণা প্রকাশনা (Research Publication) রয়েছে। তিনি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট (BRRI)-এ “বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা” হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন, পরবর্তিতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (BADC)-এ সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত থাকেন এবং অবশেষে ২০তম বিসিএস (কৃষি) ক্যাডারে যোগদান করেন।

তিনি লিয়েনে/ফরেন সার্ভিসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (EU)-এর অর্থায়নকৃত এসএনভি-নেদারল্যান্ডস্ ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশান কর্তৃক বাস্তবায়নকৃত নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক প্রকল্পে “হর্টিকালচারাল এক্সপার্ট/এডভাইজার” হিসেবে কর্মরত থেকে দক্ষতা ও মেধার স্বাক্ষর রাখেন এবং তার স্বীকৃতি স¦রুপ “বিশেষ এ্যাওয়ার্ড” প্রাপ্ত হন। ইতিপূর্বে তিনি ড্যানিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশান (DANIDA)-এর আইএফএমসি প্রকল্পে ড্যানিডা প্রতিনিধি হিসেবে “রিজিওনাল টেকনিক্যাল কোওর্ডিনেটর (আরটিসি)” হিসেবে লিয়েনে/ফরেন সার্ভিসে কর্মরত ছিলেন। তিনি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকায় লেবু জাতীয় ফসলের উন্নয়ন প্রকল্পে “সিনিয়র মনিটরিং এন্ড ইভ্যালুয়েশন অফিসার” হিসেবে এবং জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি (নাটা), গাজীপুরে “উপপরিচালক” হিসেবে কর্মরত থেকে সুনাম কুড়িয়েছেন। তিনি শিক্ষা ও কর্মজীবনে ন্যাশনাল সাইন্স এন্ড টেকনোলজি (NST) ফেলোশিপ, ড্যানিডা (DANIDA) ফেলোশিপ, নেদারল্যান্ডস্ ফেলোশিপ প্রোগ্রাম (NFP) এবং প্রধানমন্ত্রী (PM) ফেলোশিপ পাওয়ার গৌরব অর্জন করেন। তিনি কর্মকালীন সময়ে সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে উচ্চশিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও ওয়ার্কশপের সুবাদে ডেনমার্ক, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস্, থাইল্যান্ড, দুবাই, ভারত ও পাকিস্তান ভ্রমন করেন।

তিনি বর্তমানে ২০তম বিসিএস (কৃষি) এসোসিয়েশন-এর সভাপতি; কৃষিবিদ ইনষ্টিটিউশন বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদ, বাংলাদেশ সোসাইটি অব এগ্রোনমি ও বাংলাদেশ কবিতা সংসদ-এর আজীবন সদস্য এবং বিসিএস (কৃষি) এসোসিয়েশন, ২০তম বিসিএস ফোরাম (সকল ক্যাডার), South Asian Climate Outlook Forum (SASCOF), Climate Services User Forum for Agriculture and Water (CSUF) এবং South Asian Forum on Agriculture Meteorology (SAFOAM)-এর সদস্য। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাগত সংগঠনের সাথে জড়িত থেকে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছেন। পেশাগত পরিচয়ের পাশাপাশি ড. মোঃ শাহ কামাল খান কবি, গল্পকার ও উপন্যাসিক হিসেবে ইতিমধ্যে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত সাহিত্য অনুরাগী। সাহিত্যের বিভিন্ন অঙ্গনে অবাধ দখল রয়েছে তাঁর। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ প্রভৃতি ক্ষেত্রেই রয়েছে তাঁর স্বাচ্ছন্দ্য বিচরণ। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র্র্র (বিপিএটিসি) হতে প্রকাশিত স্মরণিকায় তাঁর লেখা প্রকাশ হয়ে সুধী মহলে অত্যন্ত প্রশংসনীয় হয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এবং কৃষি কথায় তাঁর সাহিত্য ও কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন লেখা প্রকাশ পেয়েছে। পেশাগত ব্যস্ততার মাঝেও সাহিত্যকে হৃদয়ে লালন করেন একান্ত গহীনে। সমাজ জীবনের বিভিন্ন ঘটনা, দুর্নীতি, অনিয়ম, বৈষম্য, অবিচার, সামাজিক অনাচার প্রভৃতি ক্ষেত্রে তাঁর লেখনীতে তীব্র প্রতিবাদ লক্ষণীয়। সহজ সরল প্রাঞ্চল ভাষায় ঘটনার বিবরণ এবং রুচিশীল শব্দ বিন্যাস সত্যিই প্রশংসার দাবীদার। জীবন ঘনিষ্ঠ রচনা সম্ভার নিয়ে তাঁর প্রকাশিত উপন্যাস ”তবু মনে রেখ” ও গল্পগুচ্ছ ”তুমি রবে নিরবে” পাঠক মহলে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে। কর্মজীবনের শুরু থেকেই কৃষি পেশাকে একান্ত আপন করে নিয়ে মনের গহীনে স্থান দিয়ে বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এই অসাধারণ প্রতিভাবান ব্যক্তিত্ব। তিনি প্রকল্প পরিচালক হিসেবে প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের কৃষি উন্নয়নে অভূতপূর্ব অবদানের লক্ষ্যে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা, সুপরামর্শ, আশির্বাদ ও অনুপ্রেরণা একান্তভাবে কামনা করেন।